Prehistoric Era ( প্রাক ঐতিহাসিক যুগ অথবা প্রস্তর যুগ ) ,লৌহ যুগ , মেহেরগড় সভ্যতা & ভীমবেটকা গুহা

 প্রাক ঐতিহাসিক যুগ অথবা প্রস্তর যুগ


প্রাগৈতিহাসিক যুগ:- প্রাগৈতিহাসিক যুগ হলো মানব সভ্যতার সেই অধ্যায় যে সময়ের কোনো লিখিত বিবরণ নেই, আছে কেবল মাত্র প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান। যার উপর ভিত্তি করেই সেই যুগের ইতিহাস রচিত হয়।


• এই সময়ের মানুষেরা কোনো লিপি কিংবা অক্ষরের ব্যবহার জানত না। এই যুগের সংস্কৃতি বলতে শুধুমাত্র মৃৎশিল্প, বাসস্থান এবং হাতিয়ারই উপকরণ ছিল।

• প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষেরা মূলত পাথরের যন্ত্রপাতি ও হাতিয়ার ব্যবহার করতো বলেই এই যুগকে 'প্রস্তর যুগ' বলা হয়ে থাকে।

• প্রাগৈতিহাসিক যুগ কিংবা প্রস্তর যুগকে পাথরের হাতিয়ার ও তার আকৃতির ওপর নির্ভর করে পণ্ডিতরা মূলত তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন।

যথা:

1. প্রাচীন প্রস্তর যুগ

2. মধ্য প্রস্তর যুগ

3. নব্য প্রস্তর যুগ


1) প্রাচীন প্রস্তর যুগ (Upto 9000 BC):

এই যুগের মানুষেরা বিরাট আয়তনের পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করত এবং এই সব হাতিয়ারের কোন মসৃণতা কিংবা সৌন্দর্য ছিল না। মূলত কোয়ার্জাইট পাথর দ্বারা এইসব অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণ করা হতো, তাই এই যুগের মানুষকে কোয়ার্জাইট মানুষ বলা হত।

প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষেরা একটিমাত্র হাতিয়ার দিয়েই মাংস কাটা, কাঠ কাটা কিংবা শিকারের কাজ চালাতে। অস্ত্রটি ছিল 'হাতকুঠার'।

বৈশিষ্ট্য:

• বিরাট আয়তন এর হাতিয়ার ব্যবহার করত।

• স্থায়ী বাসস্থান ছিল না, মূলত যাযাবর জীবন যাপন করত।

• এই যুগের মানুষ ছিল খাদ্য সংগ্রাহক, খাদ্য উৎপাদন ক্ষমতা তাদের মধ্যে ছিল না।

পশুর মাংস, বনের ফল, লতাগুল্ম ইত্যাদি খেয়েই জীবন ধারণ করত তারা।



Note:

• অস্ত্র: হাতকুঠার, কাটারি, চাছনি।

• স্থান: বোলান উপত্যাকা (মধ্যপ্রদেশ), ভীমবেটকা (মধ্যপ্রদেশ), শোন নর্মদা ও তুঙ্গ ভদ্রা উপত্যাকায় সোহান উপত্যকা (পশ্চিম পাঞ্জাব)।

• সময়কাল: আনুমানিক 9,000 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে ভারতবর্ষে এই যুগের শেষ হয়।

> প্রাচীন প্রস্তর যুগ কে ইংরেজিতে Palaeolithic Age বলে। এই Palaeolithic শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন জন লুবক।

2) মধ্য প্রস্তর যুগ (9000BC-4000BC) :-

এই যুগের মানুষেরা মূলত ক্ষুদ্র আকৃতির হাতিয়ার ব্যবহার করত। তাই এই যুগকে ক্ষুদ্রান্ত্র যুগ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়।

বৈশিষ্ট্য:


মৃৎ শিল্প ও কৃষি কাজের সূচনা হয় এই সময়।

• গরু, ভেড়ার মত প্রাণীকে গৃহপালিত করার প্রচেষ্টা দেখা যায় প্রথম এই যুগেই।

Note:

• অস্ত্র:- বর্শাফলক, ক্ষুদ্রান্ত্র ও কর্তনীর ব্যবহার দেখা যায়।

• স্থান:- পাঁচমারি, ভীমবেটকা (মধ্যপ্রদেশ), লংঘাঞ্জ (গুজরাত)।

সময়কাল:- মোটামুটি 9000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে 4000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ভারতে এই যুগ স্থায়ী হয়েছিল।

> বিন্ধ্য পর্বতের গুহার মধ্যে থেকে প্রথম ক্ষুদ্রাস্ত্র আবিষ্কার করেন কার্লাইল।

3) নব্য প্রস্তর যুগ (4000BC-1800BC):

এই যুগে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন ঘটে। এই সময় মানুষ খাদ্য সংগ্রাহকের পরিবর্তে খাদ্য উৎপাদক হয়ে ওঠে।


বৈশিষ্ট্য:-

• মধ্য প্রস্তর যুগের কৃষি কাজের সূচনা হলেও নব্য প্রস্তর যুগে কৃষি ও পশুপালন অনেক বেশি অগ্রসর হয়। এই যুগে মানুষ বার্লি, গম ধান প্রভৃতি চাষের সূচনা করে।

• কুমোরের চাকা আবিষ্কার হয় এবং আগুনের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

• মানুষ যাযাবর জীবন ত্যাগ করে স্থায়ী বসতি গড়ে তুলতে শুরু করে।

• এই যুগের পাথরের হাতিয়ার গুলি ছিল অনেক বেশি মসৃণ, ধারালো ও ব্যবহার উপযোগী।

Note


অস্ত্র : মসৃণ-ধারালো ছুরি, বশী প্রভৃতি।

• স্থান: ভারতের প্রায় সর্বত্রই কমবেশি এই যুগের নিদর্শন পাওয়া গেছে। PCS

সময়কাল: মূলত 4000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে 1800 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এই যুগ লক্ষ্য করা যায়।

> লে মুশিয়ের নব্য প্রস্তর যুগের নিদর্শন ভারতে প্রথম আবিষ্কার করেন।


তাম্র প্রস্তর যুগ (1800 BC-1000 BC) :


নব্য প্রস্তর যুগের পরবর্তী সময়ে মানুষ ধাতুর ব্যবহার শুরু করে এবং প্রথম ধাতু হিসেবে তামার ব্যবহার প্রচলন হয়। বলাই বাহুল্য এইসময় পাথর এবং ধাতুর ব্যবহার প্রচলিত ছিল, এর জন্যই এই সময়কে তাম্র প্রস্তর যুগ বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য:


• মূলত কৃষিকাজ, শিকার, মৎস্য শিকার প্রভৃতি কাজ করে তারা জীবন-যাপন করতো।

• মানুষের এই সময় মাটি, কাঠ ও পোড়া মাটির তৈরি বাড়ির নির্মাণ শেখে।

ষাঁড় ও মাতৃদেবীর পূজা প্রচলিত ছিল।


স্থান:- ছোটনাগপুর মালভূমি থেকে গাঙ্গেয় উপত্যাকা পর্যন্ত এই যুগের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া মাইসোর ও নর্মদা উপত্যকাতেও এই যুগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অস্ত্র:- বাটালি, কুঠার, হারপুন ইত্যাদি।

• সময়কাল: মূলত 1800 খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে 1000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ভারতে লক্ষ্য করা যায়।

তামা আবিষ্কারের পরপরই তামার সঙ্গে টিন ধাতু মিশিয়ে ব্রোঞ্জ তৈরি করা হয়। এবং এই সময় ব্রোঞ্জের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য ভাবে লক্ষ্য করা যায়। এরপর আসে লৌহ যুগ।

লৌহ যুগ


তাম্র প্রস্তর যুগের সূচনার পরবর্তী সময়ে লোহা আবিষ্কৃত হয় এবং এই সময় থেকে লৌহ যুগের সূচনা। কিন্তু জেনে রাখা ভালো ভারতবর্ষের সর্বত্র তামা কিংবা ব্রোঞ্জ যুগ অথবা লৌহ যুগের সূচনা একই সময় হয়নি।

যেমন দক্ষিণ ভারতে ব্রোঞ্জ কিংবা তাম যুগের কোন অস্তিত্বই ছিল না। মধ্য প্রস্তর প্রস্তর যুগের পর দক্ষিণ ভারতের সরাসরি লৌহ যুগের সূচনা হয়।

বিভিন্ন স্থপতি সৌধ কিংবা স্মৃতিস্তম্ভ থেকেই একমাত্র তাম্র-ব্রোঞ্জ যুগ থেকে লৌহ যুগকে আলাদা করা যায়। ভারতবর্ষের বেশ কিছু স্থানে, যেমন আসাম, বিহার, মধ্য ভারত গুজরাট, কাশ্মীর প্রভৃতি জায়গায় এইসব সৌধের নিদর্শন পাওয়া গেছে। তবে সবথেকে বেশি পরিমাণে এসব সৌধ কিংবা স্মৃতিস্তম্ভ দেখা গেছে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক নিকটবর্তী এলাকায়।

ধাতুর যুগের সূচনা থেকে এই লৌহ যুগের সূচনা পর্যন্ত সময়কালকে প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ বলা হয়।



মেহেরগড় সভ্যতা

(7000BC-3200BC)


মূলত বালুচিস্তানের ঝোর নদী থেকে পশ্চিম ভারতের সিন্ধু নদ পর্যন্ত অঞ্চলের মধ্যস্থিত প্রায় 500 একর স্থান জুড়ে গড়ে উঠেছিল এই মেহেরগড় সভ্যতা। বোলান গিরিপথ এর কাছে এবং কোয়েটা শহর থেকে প্রায় 150 কিলোমিটার দূরত্বে কাচ্চি সমভূমিতে মেহেরগড় সভ্যতার প্রত্নক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।

আবিষ্কারক: ফরাসি প্রত্নতাত্ত্বিক জেন ফ্রাঁসোয়া জারিজ ও রিচার্ড মিডৌ 1974 সালে এই সভ্যার আবিষ্কার করেন। (রেডিও কার্বন-14 পদ্ধতি দ্বারা পরীক্ষিত)

সময়কাল: প্রাগৈতিহাসিক যুগে 7000 BC থেকে 3200 BC পর্যন্ত এই সভ্যতার প্রমাণ পাওয়া যায়। মেহেরগড় সভ্যতাকে মূলত সাতটি স্তরে ভাগ করা যায় তার মধ্যে প্রথম তিনটি স্তর ছিল নব্য প্রস্তর যুগে। পরবর্তী স্তরগুলোতে ধাতুর যুগের সূচনা হয়। ১২৫-

পরিসীমা: পূর্বে হিমালয় পর্বত ও থর মরুভূমি। পশ্চিমে ইরাক, ইরান, ভূমধ্যসাগর, আরবের মরুভূমি। উত্তরে বলকান, এলবুজ, হিন্দুকুশ, ককেশাস প্রভুজি ইউরো-এশিয়াটিক পর্বতমালা। দক্ষিনে মহেঞ্জোদাড়ো ও কর্কটক্রান্তি রেখার মধ্যবর্তী অঞ্চল। EDUCATION

প্রাচীনত্ব: প্রাচীনত্ব নির্ধারণের অত্যাধুনিক রেডিও কার্বন 14 পদ্ধতি, বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণাদি ও পুরাতাত্ত্বিক গবেষণালব্ধ তথ্য জানা গেছে যে, এই সভ্যতার মোট সাতটি পর্ব যার মধ্যে প্রথম তিনটি পর্ব নতুন প্রস্তর যুগের সমসাময়িক। তবে এর নগরায়নের পরিণত রূপটি পরিলক্ষিত হয় খ্রিস্টপূর্ব 3200-2600 খ্রিস্টপূর্বাব্দে। আনুমানিক 2600 খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই সভ্যতা মানবশূন্য হয়ে পড়ে।


সভ্যতার বিভিন্ন কেন্দ্র সমূহ:-


মেহেরগড়, কিলেগুল মহম্মদ, রানা ঘুনডাই, গুমলা, আনজিরা মুভিগাবা, কোটদিজি, পেরিয়ানো ঘুনডাই, কুল্লিমেহি, ডাম্বসাদৎ প্রভৃতি উল্লেখ্য।


বৈশিষ্ট্য:


1) মেহেরগড় সভ্যতার সাতটি স্তর থেকেই জানা যায় সেখানকার মানুষের পশুপালনের জীবন থেকে শুরু করে নাগরিকতায় উত্তরণের প্রতিটা অধ্যায়ের কথা।

2) এই সভ্যতার প্রথম পর্যায় মানুষ ভ্রাম্যমাণ পশুপালক কিংবা শিকারি জীবন পালন করলেও পরবর্তীতে কৃষিভিত্তিক জীবন যাপন শুরু করে এবং স্থায়ী বাসস্থান গড়ে তোলে।

3) মেহেরগড় সভ্যতা ছিল কৃষিকেন্দ্রিক গ্রামীণ সভ্যতা। প্রথম থেকে নানা প্রজাতির বার্লি যব গম চাষ করতো এখানকার মানুষেরা। পরবর্তীতে কার্পাস চাষের প্রমাণ পাওয়া যায়।

4) এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় হরপ্পা সভ্যতার 2000 বছর আগেও এখানে তুলো চাষ শুরু হয়েছিল।

5) সেচ ব্যবস্থার প্রচলন ছিল এই সময়।

6) গৃহপালিত পশুদের মধ্যে গরু, ভেড়া, ছাগলের অস্তিত্ব প্রমাণ করা যায় এবং মনে করা হয় কুকুরও এইসময়ে মানুষের পোষ মেনেছিল।

7) প্রথম পর্যায়ে মৃৎশিল্পের ধারনা না থাকলেও পরবর্তীতে অভাবনীয় উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। এমনকি কুমোরের চাকার ব্যবহার দেখা যায়।

৪) মৃত দেহকে সমাধি দেয়ার প্রচলন ছিল মৃতদেহগুলোকে একপাশে কাত করে হাঁটু মুড়ে সমাধিস্থ করা হতো এবং সমাধির পাশে রেখে দেওয়া হতো ঝিনুক জাতীয় লকেট পাথরের পুঁতি প্রভৃতি।

9) তামার আবিষ্কার এবং প্রয়োগ এই যুগের উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

10) বিভিন্ন সিলমোহর কিংবা পোড়ামাটির নারীমূর্তি পাওয়া গেছে যেগুলি হরপ্পা সভ্যতায় প্রাপ্ত নারী মূর্তী ও সিলমোহরের পূর্ব নিদর্শন বলে মনে করা হয়।ce Think PGS

11) এখানকার মানুষ দামি পাথরের মালা (কর্নেলিয়াস), টারকোয়েজ, লাপিস লাজুলি ঝিনুকের মালা ব্যবহার করত।

12) পাথর এবং ধাতু উভয়টি তৈরি বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গেছে এই অঞ্চল থেকে।

মেহেরগড় সভ্যতার পতন: বিভিন্ন ঐতিহাসিকেরা বিভিন্ন কারণ ব্যাখ্যা করেছে মেহেরগড় সভ্যতার পতনের কারণরূপে। যেমন- জলবায়ুর পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বাসভূমির পরিবর্তন এবং বহিঃশত্রুর আক্রমণ।

গুরুত্ব: মেহেরগড় সভ্যতার আবিষ্কারের গুরুত্ব অনেক। এই সভ্যতার আবিষ্কারের ফলে ভারতীয় সভ্যতা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতটিই সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে গেছে।


মেহেরগড় সভ্যতা আবিষ্কারের আগে মনে করা হতো সিন্ধু সভ্যতায় ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতা। কিন্তু এর আবিষ্কার প্রমাণ করে সিন্ধু পূর্ব যুগে ভারতে একটি উন্নত সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। এছাড়াও আগে মনে করা হতো যে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো ছিল মেসোপটেমিয়ার দূরবর্তী কোন উপনিবেশ। কিন্তু পরবর্তীতে মেহেরগড় সভ্যতা আবিষ্কারের ফলে আগের ধারণার বক্তব্যে কুঠারাঘাত করা গেছে। এবং হরপ্পা সভ্যতার মানুষ যে বহিরাগত নয়, তারা ভারতেরই মানুষ তাও মেহেরগড় সভ্যতা আবিষ্কারের ফলেই প্রমাণিত হয়েছে


ভীমবেটকা গুহা


ভীমবেটকা হল ইউনেস্কো স্বীকৃতি একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্থান। এটি মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভূপালের থেকে 45 কিমি দক্ষিণে বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণ প্রান্তে রাইসেন জেলায় অবস্থিত। এটি প্রায় এক লক্ষ বছর আগে পুরা প্রস্তর যুগের (প্যালিওলিথিক) মানুষের বসবাসের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এই স্থানে গুহাচিত্র দেখতে পাওয়া যায়। প্রথমে এটি বৌদ্ধ স্থান হিসেবে মনে করা হলেও পরে এটি পুরা প্রস্তরীয় স্থান হিসেবে আবিষ্কার করেন ভারতীয় গুহাচিত্রের জনক ওয়াকাঙ্কর। এটিকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেয় 2003 সালে।

প্রাগৈতিহাসিক যুগের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:-

১) ভিমবেটকা-প্রথম হোমো সেপিয়েন্স এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। প্রস্তর শিলালিপি, গুহা ও চিত্রকলারও নিদর্শন পাওয়া যায় এখানে।

২) নেভাসা-সুতির বস্ত্র ব্যবহারের নিদর্শন পাওয়া যায়।

৩) অত্রণোজিখেদা-পোশাকে চিত্র অংকন করার রীতি পরিলক্ষিত হয় এই স্থানে।

৪) হস্তিনাপুর-আখ চাষের নিদর্শন পাওয়া যায়।

৫) ইনামগাঁও-মাতৃদেবীর মূর্তি পাওয়া যায়।

৬) মেহেরগড়-প্রাচীনযুগে কৃষিকার্যের নিদর্শন মেলে।

৭) কোলদিভা-সর্বপ্রথম ধান চাষের নিদর্শন পাওয়া যায়।

৮) বাগর ও আদমগড়-প্রথম পশুপালনের নিদর্শন পাওয়া যায়



সম্পর্কিত তথ্য সমূহ


• মেহেরগড় সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ সম্পর্কিত প্রথম গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়- 'সাইন্টিফিক আমেরিকান' পত্রিকায় (1980 খ্রিস্টাব্দ)।

• ঐতিহাসিকগণ আর্য আক্রমণ তত্ত্বকে নস্যাৎ করে মেহেরগড় থেকে ভারতীয় সভ্যতার পৌনঃপুনিক বিবর্তনের ধারাকে স্বীকার করে নিয়েছেন-1994 খ্রিস্টাব্দে ডিসেম্বরে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত "বিশ্ব প্রত্নতাত্ত্বিক সম্মেলনে"

• মেহেরগড়, হরপ্পা ও বৈদিক সভ্যতাকে একত্রে 'সিন্ধু সরস্বতী সভ্যতা' আখ্যা দিয়ে এক অবিভাজ্য সভ্যতার বিভিন্ন পর্ব রূপে চিত্রায়িত করেছেন-মার্কিন ভারততত্ত্ববিদ ডেভিড ফ্রলে।

• মেহেরগড়ের পশ্চিম দিকের উর্বর অঞ্চলকে আধুনিক পণ্ডিতদের নামকরণ করেছেন-"উর্বর হাঁসুলী" (Fertile Crescent)

ঐতিহাসিক সেরিন রত্নাগার মনে করেন যে, মেহেরগড় মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ইরান আফগানিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান।

ঐতিহাসিক সেরিন রত্নাকরের মত অনুসারে মেহেরগড়ের অধিবাসীরা যে বিষয়ে অবগত ছিল তা হলো-সুতিবয়ন বিদ্যা

• মেহেরগড় সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জানা যায় ব্রিজেট অলজিন ও রেমন্ড অলচিনের লেখা Barth of

Indian civilization এবং the rise of civilization in India and Pakistan in (1986)

• মেহেরগড়ের মৃৎশিল্পের সঙ্গে ইরানের শিয়ালক শৈলীর এবং দক্ষিণ তুর্কমেনিস্তানের নমাজগায় প্রাপ্ত মৃৎপাত্রগুলির সাদৃশ্য রয়েছে।

• এখানকার মানুষ দামি পাথরের (কর্নেলিয়াস) মালা,টারকোয়েজ, লাপিস লাজুলি, ঝিনুকের মালা বানিয়েছিল।

• মেহেরগড়ে ভারতীয় উপমহাদেশের স্থায়ী কৃষি কার্যের প্রাচীনতম সাক্ষ্য মিলেছে।

• এখানকার মানুষ তামার আয়নার ব্যবহার শিখেছিল, তবে তার নজির খুব কম, এটি ছিল সৌখিনদ্রব্য।

মেহেরগড়বাসীদের পতনের কারণ রূপে ঐতিহাসিকরা ১) জলবায়ু পরিবর্তন, ২) প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ৩) বাসভূমির পরিবর্তন ও ৪) বহিঃশত্রুর আক্রমণকে দায়ী করেছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post